বিশেষ প্রতিবেদকঃ
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা জনাব সাবরিনা শারমিন (ইউএনও) বরাবরের মতো অভিযান চালিয়ে গত ১৭ই মে প্রায় ২০০ বিঘা ফসলি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ করেছেন।
একের পর এক এমন সাহসী পদক্ষেপের জন্য কৃষকদের প্রসংসায় ভাসছেন ইউএনও সাবরিনা শারমিন। হয়ে উঠেছেন দুর্গাপুর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আইডল।
সরেজমিনে দেখা যায়,শনিবার দুপুরের পর অবৈধ পুকুরে অভিযান চলাকালে তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর কার্ত্তিক শাহার লোকজন প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেন। পুকুরে ইউএনওর অভিযানের খবর পেয়ে আগে থেকেই বিপুল সংখ্যক লোক সমাবেত করেন। দুপুর পর ইউএনও সাবরিনা শারমিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুকুর খনন বন্ধের নির্দেশ দেন। পরে পুকুর থেকে গাড়ি তুলে নেওয়া হয়।
এসময় পুকুরে ছিলেন না আওয়ামী লীগের কার্ত্তিক শাহা। তবে তার বিপুল সংখ্যক ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা পুকুরে অবস্থান নিয়েছিল দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোটা নিয়ে এবং বিশৃঙ্খলা তৈরির পায়তারা করে ব্যর্থ হয় প্রশাসনের কঠোর ভূমিকায় ও স্থানীয় জনতার সহায়তায়।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, এই বিলে পুকুর খনন হলে পাশের তিনটি গ্রাম বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা দেখা দিবে। শতশত হেক্টর ফসলি জমি জলাবদ্ধতায় পতিত হয়ে পড়বে। গত বছর আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাগমারা সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ছত্রছায়া তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর কার্ত্তিক শাহা দুর্গাপুর উপজেলার উজালখলসী বিলে প্রায় ২০০ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখল নিয়ে পুকুর খনন কাজ শুরু করেন। এই জমি ছিল তিন ফসলি।
পরে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতন ঘটলে তারা পালিয়ে যান। আওয়ামী সরকার পতনের পর দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল খনন কাজ । হঠাৎ এখন তারা আবারও কৃষকের জমিতে পুকুর খনন শুরু করছেন। এতে এলাকার কৃষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন।
উজালখলসী গ্রামের বাসিন্দা রহমান মিয়া বলেন, আমার অল্প কিছু জমি পুকুরের মধ্যে রয়েছে। আমাকে না জানিয়ে তারা আমার জমিতে পুকুর খনন শুরু করছে। আমি একটি টাকাও পাইনি।এমন অভিযোগ অনেক কৃষকের। ইউএনও এসে পুকুর খনন বন্ধ করে দিয়েছে এতে আমরা এলাকাবাসী অনেক খুশি।
সাবরিনা শারমিনের প্রশংসা করে তারা বলেন, এমন ইউএনও দেশের প্রতিটি উপজেলায় প্রয়োজন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও সাবরিনা শারমিন বলেন, উজালখলসী বিলে অনুমতি ছাড়াই পুকুর খনন হচ্ছিল খবর পেয়ে আমি ও থানার ওসি দুরুল হোদা সাহেব অভিযান দিই। পুকুর খনন বন্ধ করে গাড়ি তুলে নেওয়া নির্দেশ দেওয়া হয়। ইতি পূর্বেও বেশ কয়েকবার এই পুকুরে অভিযান দিয়ে অর্থ দন্ড সহ নানা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
ইউএনও আরও বলেন,ওখানে উপস্থিত অনেক লোকজন আমাকে পুকুর খনন হওয়ার অনুরোধ করেছেন। আমি তাদের বৈধ পন্থায় আবেদন করে পুকুর খননের অনুমতি নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। আমি আইনের রক্ষক, সরকার আমাকে নিয়োগ করেছেন জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য। আমি আইন মেনে সৎ ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে চাই উপজেলা বাসিদের কল্যাণে।