স্টাফ রিপোর্টারঃ
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে তিন ফসলি কৃষি জমিতে অবাধে পুকুর খননের মহা উৎসব। কৃষি জমিতে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের ধ্বংসযজ্ঞ চললেও প্রশাসনের চোখে যেন কালো পর্দা। নাম মাত্র কিছু অভিযান চালালেও প্রভাবশালীরা থেকে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
অপরদিকে, ফসলি জমিতে অবৈধভাবে মাটি কাটার পর মাটি পরিবহনের জন্য উপজেলার কাঁচা ও পাকা সড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে অনায়াসে। কাঁচা-পাকা সড়ক যেন প্রভাবশালীদের পৈতৃক সম্পত্তি। মাটি বোঝাই ট্রাক্টর চলাচল করার কারণে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় মাটি পড়ে অন্যান্য যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে সড়কগুলো। অসাধু ব্যক্তিদের জন্য সড়কগুলো নষ্ট হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে।
অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করতে না পারলেও বিএনপির প্রভাবশালী নেতারা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে উপজেলা জুড়ে দিন-রাত সমানতালে পুকুর খননের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পুকুর খননের ফলে এ উপজেলায় আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে ফসলি কৃষি জমির পরিমাণ।
এদিকে, পুকুর খনন রোধে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের দাবি-পুকুর খননের খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে নেয়া হচ্ছে ব্যবস্থা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ভেকু দালাল গুলো পুকুর সংস্কারের নামে সরকারি কাঁচা পাকা রাস্তা গুলো পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করায় রাস্তার হ য় ব র ল অবস্থা। সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ের রাস্তাগুলো এখন মাটি বহনকারি দালালদের নিয়ন্ত্রণে সেখানে ঘটছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা, সৃষ্টি হয়েছে জনদুর্ভোগ।
এছাড়া দুর্গাপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে চলছে অবৈধ ভাবে পকুর খননের কাজ। এর মধ্যে মাড়িয়া ইউনিয়নের কাশেমপুর গ্রামে ৬ বিঘা ও চৌবাড়িয়া গ্রামে ২০ বিঘা। দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নের কুশাডাঙ্গা গ্রামে ৬ বিঘা, আমগ্রাম জাগিরপাড়া ৮ বিঘা ও পালশা গ্রামে ৫ বিঘা। জয়নগর ইউনিয়নে পুরাতন ৫ বিঘা ও নারিকেলবাড়িয়া ৭০ বিঘা। কিসমতগনকৈড় ইউনিয়নে ১৫০ বিঘা, গোপালপাড়া ৩০ বিঘা ও উজালখলসী বাদইল বিলে ৩০ বিঘা। ঝালুকা ইউনিয়নের কাঠাঁলবাড়ীয়া গ্রামে ৬ বিঘা। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় চলছে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের কাজ।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী জানান, ফসলি জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে নতুন পুকুর খননের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়াও পুকুর খননের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে এবং ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন বলেন, দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসন পুকুর খননের বিপক্ষে কঠোর অবস্থানে ছিল, আছে এবং থাকবে। আমাদের কাছে তথ্য আসার সাথে সাথে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি । উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, উজানখলসি, বেলঘরিয়া, নারকেল বাড়িয়া,পারিলা, কাঁঠালবাড়িয়া,পালশা সহ বেশ কিছু অবৈধ পুকুরে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বেশ কয়েকবার। করা হয়েছে অর্থ দন্ড,খুলে আনা হয়েছে ব্যাটারি, দেওয়া হয়েছে মামলা। এতো কিছুর পরও রাতের অন্ধকারে চলছে অবৈধ পুকুর খনন। গভীর রাতে অভিযান চালানো যতটা সম্ভব সেটাও করা হচ্ছে। আমি যতদিন দুর্গাপুরে আছি অন্যায়ের বিরুদ্ধে থাকবো। আইনি পদক্ষেপ নিবো।
মোবাইল নাম্বারঃ ০১৭১৭-৯৩৮৪৮৪
০১৯১৩-৭২৭৬৯০
ই-মেইলঃ [email protected]