দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ সহ ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মোসাঃ নাসরিন আরা পারভীন(EPI) টেকনোলজিস্ট নামের এই কর্মচারী তার অধিনস্ত HA,VHV,FWA,CHCP,SACMO,SSN,TLCA,MTR,MT(LAB),LAB(ATT) সহ বিভিন্ন পদের কর্মচারীদের প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীগণ।
তারা বলেন, জনবল ও সরঞ্জাম সংকট থাকায় খন্ড কালিন চুক্তি ভিত্তিক কিছু মাঠকর্মী নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ। দুঃখের বিষয় কর্মীরা কাজ শেষ করেলেও তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাইনি। এমন একাধিক প্রোগ্রামের মাধ্যে রয়েছে ভিটামিন A+ ক্যাম্পেইন, কৃমিনাশক ট্যাবলেট বিতরণ,এম.আর ক্যাম্পেইন,UHC-তে নিয়মিত টিকাদান(পোর্টার),কোভিট ১৯,টিএ বিল, পেট্রোল বিল, বিভিন্ন খাত থেকে ৫২,৭৬,৯০৮/- টাকা সহ কোভিট ১৯ ভ্যাকসিন বিক্রি, জন্মনিবন্ধনে বয়স নয়ছয় সহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করে উপজেলা গেটে কিনেছেন ২তলা বিশিষ্ট পাকা বাড়ি এবং রাজশাহী শহরে প্লট।
সূত্র বলছে,তারা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে মোঃ আবু মাসুদ খান, উ.প.প.অ(অঃদাঃ) উপপরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা, রাজশাহী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন (স্মারক নং-উপপঅ/দূর্গা/রাজ/২৩/৮২) । অনুলিপি প্রেরণ করেন জেলা প্রশাসক, পরিচালক (স্বাস্থ্য), পরিচালক(পরিবার পরিকল্পনা),সিভিল সার্জন, রাজশাহী সহ চেয়ারম্যান (উপজেলা পরিষদ), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা, দুর্গাপুর, রাজশাহী।
ভুক্তভোগীগণ নাসরিনের বিরুদ্ধে দুদকেও লিখিত অভিযোগ করেছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের তদন্ত চলমান। হাসপাতাল একাধিক সূত্র বলছে,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মচারী নাসরিন (EPI) গত কয়েক বছরে বিভিন্ন খাতে খরচ দেখিয়ে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে এবং তার অধিনস্তদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে হয়েছেন কোটি পতি। তার ভাই মোঃ নজরুল ইসলাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তার নামের ট্যাগ লাগিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার, কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ভাতার টাকা আত্মসাৎ ও আনুতোষিক ভাতা নয় ছয় করে আসছেন তিনি। এমনকি ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন, খুদে চিকিৎসক ক্যাম্পেইন ভাতা ও মাঠকর্মীদের সম্মানি ভাতা পর্যন্ত নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নেন তিনি। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অফিসে অভিযোগ এবং অতীতে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি কাউকেই তোয়াক্কা করেন না।
নাসরিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা জানতে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলতে পারবেন উনি সব জানেন । উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়া কিছুই করা যায় না এমন টাই বলেন তিনি। কে এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ? জানতে চাইলে তিনি বলেন,এই মুহূর্তে এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। পরিশেষে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,সবটাই আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত।
নাসরিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ মোঃ রুহুল আমিন বলেন, নাসরিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সভাপতির সাথে কথা হয়েছে রিপোর্ট পেতে কয়েক দিন সময় লাগবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল নাম্বারঃ ০১৭১৭-৯৩৮৪৮৪
০১৯১৩-৭২৭৬৯০
ই-মেইলঃ [email protected]