বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী জুড়ে চলছে অবৈধ পুকুর খনন মহা উৎসব। বিশেষ করে জেলার নয় উপজেলা বিলগুলোয় চলছে এ কর্মকাণ্ড। এতে জমি হারিয়ে পথে বসছে হাজারো ক্ষুদ্র কৃষক। বন্ধ হচ্ছে বিলের পানি নিষ্কাশন নালা। ফলে বর্ষায় জলাবদ্ধতায় ব্যহত হচ্ছে চাষাবাদ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার পবা, মোহনপুর ও বাগমারায় খনন হচ্ছে ব্যাপক পুকুর। মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় রাতদিন সমান তালে চলছে এ খনন কাজ।
তবে প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে জেলার দুর্গাপুর সেই সুযোগ পাচ্ছেনা ভূমি দস্যুরা। উল্লেখ্য, গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি রাত ১১.১৭ মিনিটে দূর্গাপুর উপজেলা পালশা গ্রামে পুকুর খননের খবর প্রশাসনকে জানানো হয়। ১৮ই ফেব্রুয়ারি দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব সাবরিনা শারমিনের নেতৃত্বে এবং দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ দুরুল হোদার সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে, পুকুর খনন কারি মোহনগঞ্জ গ্রামের জিল্লু মাষ্টার কে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন প্রশাসন । অতীতেও এমন অনেক সফলতা আছে দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসনের।
সম্প্রতি উচ্চ আদালতে রিট করে অবৈধ ও শ্রেণি পরিবর্তন না করেই মাঠের পর মাঠ পুকুর খনন করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এতে সহায়তা দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। এ নিয়ে মোটা অংকের অর্থের লেনদেন হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে তা মানতে নারাজ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আদালতের রিট থাকায় এ নিয়ে কিছুই করা যাচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার পবা উপজেলা পারিলা ইউনিয়নের সারাংপুর গ্রামের আয়চন বিলে ৩০ বিঘা, তিন ফসলি জমিতে প্রভাব খাটিয়ে পুকুর খনন করছেন নূর মোহাম্মদের ছেলে মোঃ মাহাবুর। তিনি নিজেকে ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতা পরিচয় দেন। তার কাছে পুকুর খনন অনুমতি পত্র ও কৃষকদের সাথে করা চুক্তি পত্র দেখতে চাইলে দেখাতে পারেননি । তিনি নিজে স্বীকার করেন তার অনুমতি পত্র নাই। ৪টি খননযন্ত্র(ভেকু) কাজ করছে রাতদিন।
অন্য দিকে, সারাংপুরের পাশের গ্রাম হাট গোদাগাড়ীতেও চলছে কালাম ডিলার নামের এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতার পুকুর খনন। সেই মাটি বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে রাত-দিন ব্যবহার করা হচ্ছে কাঁকড়া নামক গাড়ি। এতে ক্ষতি হচ্ছে রাস্তার। ব্যাহত হচ্ছে জন জীবন, হচ্ছে শব্দ দূষণ ও পরিবেশ দূষণ।
থানা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করে চলছে এই পুকুর খনন। ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হয়েছে দৈনিক বিজয় ২৪ অনলাইন পোর্টালের এই প্রতিবেদককেও।
এলাকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের একজন কুরবান আলী। নিজের অল্প সামান্য কিছু জমি । সেই সামান্য জমিটুকু গ্রাস করতে চাই মাহাবুর বলে অভিযোগ করেন। এই জমিতে পুকুর হলে তার কর্ম বন্ধ হয়ে যাবে। সংসার খরচ ও দুই মেয়ের পড়ার খরচ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না এমনটায় দাবি তার।
উপস্থিত জনতার একাধিক ব্যক্তি বলেন, যেখানে পুকুর খনন হচ্ছে সেখানে বছরে তিন ফসল উৎপাদন হয়। সরেজমিনে দেখা যায়,জমিতে ধানের চারা রোপণ করা আছে। আছে পেঁয়াজ ও রসুন। এলাকা বাসির দাবি অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ করা।
এই বিষয়ে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আরাফাত আমান আজিজের সাথে কথা মুঠোফোনে কথা হলে তিনি এই পুকুর খনন সম্পর্কে অবহিত নন বলে জানানা। প্রতিবেদন লিখার সময়, তিনি (নির্বাহী কর্মকর্তা) বিষয়টি জানার পর আইনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন কি না তা একাধিক বার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
মোবাইল নাম্বারঃ ০১৭১৭-৯৩৮৪৮৪
০১৯১৩-৭২৭৬৯০
ই-মেইলঃ [email protected]