পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে সেই দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক হাফিজ শোকজ
স্টাফ রিপোর্টারঃ গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, দখলবাজি,নির্যাতন,হত্যা,মিথ্যা মামলা,ক্ষমতার অপব্যবহার সহ নানা অপরাধ-অপকর্ম চালিয়েছে দেশ জুড়ে।
এই নির্যাতন থেকে বাদ পড়েনি রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলার মফস্বল এলাকা জয়নগর ইউনিয়নের পারিলা গ্রাম।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়,পারিলা গ্রামের হাবিবুর রহমান (হবির) বড় ছেলে এই হাফিজ। তিনি নিজেকে একজন শিক্ষক ও আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় জোর পূর্বক দাওকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হন । সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা, সাবেক এমপি ডাঃ মনসুর,জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ মজিদ সরদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল মন্ডল সহ আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সাথে ছিল তার দহরম-মহরম সম্পর্ক। মূলত তখন থেকেই শুরু হয় এলাকায় তার আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজি।
এই হাফিজের অতীত ইতিহাস, সে ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর তার নেতৃত্বে ওয়াজনবী , সান্টেন, রাব্বানী (বিশিষ্ট মাদক ব্যবসায়ী), মাইনুল, হায়দার, রিপন, আমিনুল সহ আরো ১০-১৫ জনকে নিয়ে গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। তারা সেই সময় বিএনপির বিভিন্ন নেতা কর্মীদের ঘরবাড়ি ভাংচুর-লুটপাট সহ চাঁদাবাজি করে। সেই সত্যতা পাওয়া যায় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি হাজী মোঃ শামসুল হকের বাড়িতে গেলে । আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় হাফিজের সহযোগিতায় এলাকায় চলতো মাদক ব্যবসায় । সে তৈরি করে পারিলা গ্রামের বিশিষ্ট মাদক ব্যবসায়ী রাব্বানীকে এবং ইউনিয়নের মাদক ব্যবসা চলতো তার ইশারায়।
হাফিজ মাষ্টারের সাথে কথা বলার জন্য দিনের বিভিন্ন সময়ে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করে নাই ।
পূর্বে হাফিজের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও প্রশাসন তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে নাই ।
এলাকা বাসীর দাবি এই চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় না নিলে এলাকায় বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
হাফিজ সম্পর্কে জানতে চেয়ে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাতে কথা হলে তিনি জানান, গত ২২ই জানুয়ারি দৈনিক আওয়ার বাংলাদেশ পত্রিকায় “এখনো বহাল সেই প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান” এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে প্রশাসনের নজরে আসে । দাওকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাফিজুর রহমান হাফিজের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি দীর্ঘ পাঁচ মাসের অর্থ আত্মসাৎ করেছিলেন,যা আমার নির্দেশে স্কুল ফান্ডে জমা হয়েছে এবং অর্থ আয়-ব্যয় হিসাব দেখার জন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
