সব উপেক্ষা করে অনিয়মের বোঝা মাথায় নিয়ে এখনো বহাল প্রিজন্স কামাল
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দেশ যখন সংস্কারের পথে তখনো পূর্বের আমলনামা নিয়ে বহাল রাজশাহীর প্রিজন্স ডিআইজি কামাল হোসেন। কামাল হোসেনের আমলনামা যখন দেশের শীর্ষস্থানে তখনো তিনি দাপটের সাথে নানা ঘটনার জন্ম দিচ্ছেন।
সূত্র বলছে, দেশের শীর্ষ দুর্নীতিবাজ ৯৬ কর্মকর্তার অন্যতম একজন এই কামাল হোসেন। তিনি কিভাবে এখনো কারাগারের মত গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত জায়গার তদারকি করছেন বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন অনেকেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকা কামাল হোসেনকে নিয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধান চলাকালে বেরিয়ে আসে তার নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির তথ্য।
জেল সুপার থেকে চলতি দায়িত্বে রাজশাহীর ডিআইজি প্রিজন্সের দায়িত্ব পাওয়া কামাল হোসেন ছাত্রলীগের বিশেষ তদবিরে হয়ে যান রাজশাহীর প্রিজন্স ডিআইজি।
দায়িত্ব পেয়েই নৌকার বৈঠার জোর দিয়ে রাজশাহী বিভাগের ৮টি কারাগারে তার নির্ধারিত সালামির নিয়ম ধার্য করে দেন । সেই সাথে প্রতিটি কারাগারে জানিয়ে দেন তার নির্ধারিত সালামি না দিলে অনত্র বদলি করে দেওয়া হবে।
শুধু বদলিতে থেমে থাকবে না সেই কারা কর্মকর্তার কার্যক্রম, তার বিরুদ্ধে জটিল ভাবে অভিযোগ দাড় করানো হবে কারা অধিদপ্তরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জেল সুপার দৈনিক বিজয় ২৪ কে জানান, প্রতিমাসে ডিআইজির সালামি পৌছায় না দিলে তার দপ্তর থেকে তলব করা হয়। তাই সকল প্রকার ঝামেলা এড়াতে প্রতিমাসে তার সালামি পৌছে দেওয়া হয়।
খবর নিয়ে জানা গেছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার চত্বরে ডিআইজি বাবুর রয়েছে বিশাল গরু ছাগলের খামার। সেই খামার চলে বন্দীদের মুখ থেকে কেড়ে নেওয়া খাবার দিয়ে। সেই খামার দেখভালের জন্য সরকারের বেতন দেওয়া দুইজন কারা রক্ষীকে ব্যবহার করেন ডিআইজি বাবু।
ডিআইজি অফিসের অপর একটি সূত্র জানায়, প্রতিমাসে কারারক্ষীদের পছন্দের জায়গায় বদলি, পছন্দের জায়গায় থেকে যাওয়া সহ নানা তদবির বাণিজ্য থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন ডিআইজি বাবু।
জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসের ২৬ তারিখে কারা অধিদপ্তরে করা মহাপরিদর্শকের নিকট ডিআইজি বাবুর নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও হুমকি ধামকির ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে । অপরদিকে ২৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র দপ্তরে সিনিয়র সচিবের নিকট আরো একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে ডিআইজি কামালের শাস্তির দাবি তুলে। জানুয়ারি মাসেই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুকে) ডিআইজি কামালের দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে আরো একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন রাফিকুর রহমান নামের ব্যক্তি।
জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের চেয়ারম্যান জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের আলোচিত কয়েকজন ব্যক্তির নাম দুদকের নজরে আসে যাদের মধ্যে ডিআইজি কামাল হোসেনের নাম এসেছিল অভিযুক্ত সেই ৯৬ কর্মকর্তার নাম গত ২১ আগস্ট বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। তবে কি কারনে তার বিরুদ্ধে এখনো ব্যবস্থা গ্রহণ হয়নি সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের একটি সূত্র জানান, ডিআইজি প্রিজন্সের বিরুদ্ধে পূর্বে নানা অভিযোগ রয়েছে। তবে গত ২৭ তারিখে পাওয়া অভিযোগ গুরুত্ব সহ দেখা হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে একাধিকবার ডিআইজি প্রিজন্স কামাল হোসেন কে মুঠো ফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন তুলে নাই।