স্টাফ রিপোর্টারঃ নওগাঁ নিয়ামতপুরে প্রেমগোসাই মেলাতে যাত্রাপালার নামে অশ্লীলতা চলছে। উচ্ছ বিদ্যালয় অফিস কক্ষ থেকে চলছে মেলা ও যাত্রাপালা কার্যক্রমের দিক-নির্দেশনা ।
নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার গুজিশহরে ঐতিহ্যবাহী প্রেমগোসাই মেলাতে যাত্রাপালা ও সার্কাসের নামে সারা রাত নগ্ন-নৃত্য পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক ও মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক, নূরুল আমিন স্কুলের দপ্তরেই চলে মেলা ও যাত্রাপালার সকল কার্যক্রমের দিক-নির্দেশনা।
চলতি মাসের ২১- জানুয়ারী থেকে যাত্রা মঞ্চস্থর নামে এই নগ্ন নৃত্য চলছে। এই নগ্ন নৃত্য দেখতে ভিড় জমাচ্ছে ছাত্র, তরুণ-যুবক-কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষ। স্থানীয় সমাজ সচেতন মানুষ বলছেন, নৃত্যের নামে এসব অশ্লীলতা চলতে থাকলে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে পতিত হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও চলতি জানুয়ারী মাসের ২১- তারিখ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী প্রেমগোসাই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
এবছর এই মেলা ১কোটি ২লক্ষ টাকা দিয়ে চুক্তিতে ইজারা নেওয়া হয়েছে। দেশে এর চেয়েও বড় বড় মেলাতে এতো টাকার ইজারা হয় নাি। মূলত স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মহলের ব্যক্তিরা এ মেলায় সার্কাস, যাত্রা পালা ও ভ্যারাইটি শো করার জন্যই এতো টাকার ডাক হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
গ্রামীণ যাত্রাপালার নামে ২৩-জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) থেকে মেলার সার্কাস, যাত্রা পালা ও ভ্যারাইটি শোতে চলছে নগ্ন নৃত্য পরিবেশনা। রাত ১১টার পর শুরু হয়ে ভোর অবধি চলে এই নগ্নতা। জনপ্রতি ২০০/ দুইশত টাকা থেকে ২০০০/দুই হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটে নানা বয়সী মানুষ এই অশ্লীলতা দেখতে ভিড় করছে।
যাত্রা মঞ্চের পার্শ্ববর্তী ঘুঘুডাঙ্গা এলাকার স্বাধীন কুমার বলেন, ‘জীবনে অনেকবার যাত্রাপালা দেখেছি, কিন্তু এমন নগ্ন নৃত্য কখনও দেখিনি। এই অশ্লীলতা বন্ধ না হলে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে পড়বে। প্রশাসন কিভাবে এমন একটা আয়োজনের অনুমতি দিলো বুঝতে পারলাম না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আরেক ব্যক্তি বলেন, রাতভর চলছে গানের তালে- তালে নগ্ন নাচ। আর এই আয়োজনে বিশেষ করে ছাত্র, তরুণ ও যুবকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। এই নগ্ন নৃত্য বন্ধ করা দরকার। যারা এর আয়োজন করেছে তারা প্রভাবশালী। সেই কারণে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। প্রশাসনই বা এসব দেখে জেনেশুনে নীরব কেন সেটাও একটা প্রশ্ন?
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক নূরুল আমিন এ মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তার উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিসে চলে মেলাতে সার্কাস, যাত্রাপালা ও ভ্যারাইটি শোর সকল কার্যক্রমের দিক- নির্দেশনা। কমিটিতে ইমরান সহ আরও বেশ কয়েকজন রয়েছে মেলার দায়িত্বে। আর প্রতি রাতে এই আয়োজন থেকে যে পরিমাণ টাকা আসে তা তিনি বাটোয়ারা নিচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মেলার সাধারণ সম্পাদক ও গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক, নূরল আমিন এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নাি। এমনকি তার মোবাইল নাম্বারে ফোন করা হলেও রিসিভ করেন নাই।
নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, মেলায় অশ্লীল নৃত্যে হচ্ছে। আমরা পুলিশের পক্ষ সেটা ধারন করে যারা মেলার অনুমতি দিয়েছে তাদেরকে অবগত করেছি। নির্দেশনা পেলেই বন্ধ করে দেয়া হবে।
নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও ) মেহেদী হাসান বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি যে, মেলার নামে বা যাত্রাপালার নামে যেন কোন অশ্লীলতা না হয়। আপনার কাছে ছবি বা ফুটেজ থাকলে আমাকে দিন, আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আর শিক্ষা প্রতিষ্টানে বসে মেলার কার্যক্রম পরিচালনা বে-আইনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল নাম্বারঃ ০১৭১৭-৯৩৮৪৮৪
০১৯১৩-৭২৭৬৯০
ই-মেইলঃ [email protected]